Bangla Helpline – বাংলা হেল্প লাইন

bangla helpline
আমেরিকা টুরিস্ট ভিসা

আমেরিকায় আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তাহলে এই পোস্টটি  আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ধৈর্য সহকারে মনোযোগ দিয়ে ‍পোস্টটি পড়বেন। যা আপনার ভিসা পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে কাজ করবে, আর আপনি পেতে পারেন আমেরিকার পাঁচ বছরের মাল্টিপল টুরিস্ট ভিসা।

আমেরিকার ভিসা নিয়ে সবারই অনেক কৌতূহল থাকে। আবার অনেকের স্বপ্নের দেশ আমেরিকা। সবার একবার হলেও আমেরিকা যাওয়ার ইচ্ছা থাকে। আর সত্যি কথা হচ্ছে আমরা চাইলেই আমেরিকা যেতে পারি, হ্যাঁ আমরা সত্যি বলছি, চাইলে আপনিও যেতে পারেন। এখন আপনি বলতে পারেন এতই কি সহজ আমেরিকা যাওয়া? আমরা বলবো হ্যাঁ আসলেই সহজ আমেরিকা যাওয়া। যদি আপনি আমেরিকা যাওয়ার একজন যোগ্য ব্যক্তি হন। আমরা কিন্তু আমেরিকার টুরিস্ট ভিসার কথা বলছি।

আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা পাবার সঠিক যোগ্যতার মাপকাঠি কি? আসলে এই ব্যাপারে কোন দিক নির্দেশনা নেই, ইউএস এম্বাসির ওয়েবসাইটেও এর কোন সুনির্দিস্ট চেকলিস্ট নেই। যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে এই নিয়ম গুলো মানলে আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন। আমেরিকার টুরিস্ট ভিসাটি মূলত ইন্টারভিউ নির্ভর একটি ভিসা। ৫ থেকে ১০ মিনিটের ছোট একটি ইন্টারভিউ এর মাধ্যমে ভিসাটি হয়ে থাকে। অন্যান্য দেশের মতো ডকুমেন্ট ভিত্তিক ভিসা নয়। ইন্টারভিউটি আপনি বাংলা অথবা ইংলিশে দিতে পারবেন।

আমরা প্রথমেই যে ভুল কাজটি করে থাকি সেটি হলো ভিজিট যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও আমেরিকার ভিসার জন্য আবেদন করে ফেলি। যে কারণে রিফিউজও হয়ে যাই। তাহলে অল্প করে ধারণা দিচ্ছি কি কি যোগ্যতা না থাকার কারণে ভিসা রিফিউজ হয়।

প্রথমত আমরা যে ভুলটি করে থাকি অনেকেই কোন দেশ ট্রাভেল করা ছাড়া ইউএস ভিজিট ভিসার জন্য দাঁড়িয়ে যাই, যেই । আবার অনেকে ফাইল প্রসেস করার জন্য বলে থাকে যে, কোন দেশ ট্রাভেল করা ছাড়াও ইউএস ভিজিট ভিসা হয় যা একবারে ভুল। তাহলে আপনি ভিসা অফিসারের কাছে কিভাবে প্রমাণ করবেন একজন ট্রাভেলার হিসেবে আপনি আমেরিকা গিয়ে আবার ফিরে আসবেন আপনার নিজ দেশে?  যেহেতু আপনি টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করছেন আর তাই  আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে আপনি একজন ট্রাভেলার। আর এটি প্রমাণ করার একটি ভালো উপায় হলো পার্শ্ববর্তী দেশগুলো অবশ্যই টুরিস্ট ভিসায় ভিজিট করা।

তবে আপনার নিজ পরিবার ও আত্মীয়র মধ্যে কেউ যদি আমেরিকায় থাকে সেক্ষেত্রে তেমন একটা ভিজিট না থাকলেও হবে, যেমন ধরেন আপনার মা-বাবা, নিজের ছেলে-মেয়ে, ভাই বোন, চাচা-চাচি, তাদের কেউ যদি আমেরিকায় থাকেন সেখানে ওনাদের দেখতে যাবেন বা ওনাদের কোন প্রোগ্রাম অংশগ্রহন করতে যাবেন এবং সেখানে আপনি উপস্থিত থাকার কারণ দেখিয়ে আমেরিকা ভিজিট ভিসায় যেতে পারেন ।  যদিও তার জন্য যতেষ্ট যুক্তিযুক্ত কারণ থাকতে হবে।

অনেকে বলে আমেরিকা থেকে আপনার জন্য ইনভাইটেশন এনে ভিসা করিয়ে দিবে, এটিও ভুল কথা। আর ইনভাইটেশন ব্যাপারটি শুধুমাত্র মেডিকেল ইমারজেন্সি, বিজনেস, কনফারেন্স, বিয়ে, জন্মদিন এবং ট্রেড ফেয়ার এর ক্ষেত্রে কিছুটা কার্যকর হয়।

দ্বিতীয়ত আপনি আপনার দেশে প্রতিষ্ঠিত, তার মানে আপনি মানে হচ্ছে বাংলাদেশে একজন প্রতিষ্ঠিত  ব্যবসায়ী বা ভালো কোন জব করেন, আপনি  আর্থিকভাবে যথেষ্ট সচ্ছল আপনার আমেরিকাতে গিয়ে টাকা খরচ করার মতো সক্ষমতা আপনার আছে, এর মানে আপনি আমেরিকা গিয়ে আবার ফিরে আসবেন। যদি অনেক টাকা থাকে বা অনেক টাকা ইনকাম করলে হয়তো আমেরিকায় যেতে পারব। এমন মনে হতে পারে তাই না? কথাটি যদিও সত্য, কিন্তু আমরা যারা ভালো কোন দেশে যাওয়ার চিন্তা করি, তখনি যখন ভালো পরিমাণ টাকা আমাদের হাতের কাছে থাকে। তাহলেই আমরা আমেরিকার ভিসা নিয়ে চিন্তা করি। সেক্ষেত্রে আমরা ভালো জব বা ভালো ব্যবসা দেখাতে পারি। হয়তো আমি কি বুঝাতে চেয়েছি বুঝতে পারছেন।

ভিসা অফিসার চিন্তা করে যে আপনি আপনার দেশে যে পরিমাণ টাকা উপার্জন করেন, হয়তো সেখানে গিয়ে আরো ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করলে আপনি আর দেশে না ফিরতে পারেন। এটা চিন্তা করে ভিসা অফিসার আপনাকে টুরিস্ট  ভিসাট নাও দিতে পারে। ইউএস এম্বাসির ওয়েবসাইটে লেখা আছে আপনি যখন নন ইমিগ্রেন্ট তথা টুরিস্ট ভিসায় (B1/B2) আবেদন করেন, ইন্টারভিউর আগের সময় পর্যন্ত ভিসা অফিসার ধরে নেন আপনি আমেরিকাতে গিয়ে আর ফিরে আসবেন না।

তৃতীয় কথাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ আমেরিকা এম্বাসির একটি অনলাইন ফর্ম আছে ফর্ম টিকে বলা হয় DS-160, ভিসা অফিসারের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করার সবথেকে বড় একটি মাধ্যম। প্রায়ই দেখা যায় অনেকে অবহেলা করে এই  DS-160 ফর্মটি পূরণ করে। যেমন অনভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে DS-160 ফর্মটি পূরণ করে থাকে। অনেকেই এই ক্ষেত্রে খরচ কমানোর জন্য টুকটাক ব্রাউজ করতে পারে বা কোন কম্পিউটার দোকান থেকে এই  DS-160 ফর্মটি পূরণ করে ফেলেন। আবার এমন কারো কাছ থেকে পরামর্শ নেয় সে হয়তো আমেরিকা টুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে তেমন অভিজ্ঞ না, হয়তো বা তিনি একবার ভিসা পেয়েছে, কিন্তু ভিসা পাওয়ার মানে এই নয় যে তিনি সব ব্যাপারে জেনে গেছেন। এভাবে অনেকেই অনভিজ্ঞ  কারো কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করে বা ইন্টারভিউ দিয়ে অনেকেই রিফিউজ হয়েছেন। কেননা DS-160 ফর্মটি এমনভাবে  ডিজাইন করা হয়েছে যাতে করে ভিসা অফিসার আপনার সম্পর্কে যা জানার বা কোন ডিসিশন নেওয়ার প্রয়োজন হলে তা DS-160 ফর্মটি থেকে পেয়ে যান।

Related Article: আমেরিকায় কম খরচে পড়ার ৫ বিশ্ববিদ্যালয়

চতুর্থ যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সেটি হলো ভিসা ইন্টারভিউ, আর যেহেতু আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা একটি ইন্টারভিউ নির্ভর ভিসা সে ক্ষেত্রে আপনার ইন্টারভিউতে ভিসা অফিসারকে বোঝাতে হবে যে আপনি আমেরিকায় গিয়ে আবার ফিরে আসবেন।

এই যে বললাম ভিসা অফিসারকে বোঝাতে হবে  আপনি আমেরিকায় গিয়ে আবার ফিরে আসবেন তার জন্য আপনাকে DS-160 ফর্মটি সুন্দর ভাবে, নির্ভুল ভাবে পূরণ করতে হবে। অনেকেই (DS-160 ফর্ম ও ইন্টারভিউ) এই গুরুত্বপূর্ণ দুইটি বিষয়কে আলাদাভাবে পার্সেন্টেজ করে। আমরা এই কাজটি করব না কারণ এই দুইটির কম্বিনেশনে কাঙ্খিত ভিসাটি আপনার হবে।

আমরা আরেকটা ভুল করি যে ডকুমেন্টকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া ও প্রচুর ডকুমেন্ট রেডি করা, যেগুলো আসলে ইন্টারভিউতে ভিসা অফিসার ধরেও দেখবেন না, তবে কিছু ডকুমেন্টস ভিসা ইন্টারভিউর সময় নিয়ে যেতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে  ভিসা অফিসার কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ থাকলে দেখতে চাইবে। অনেকের মাথায় চিন্তাটি থাকে ব্যাংক ব্যালেন্স কত থাকতে হবে, ট্রানজেকশন কেমন করতে হবে, ব্যাংকে কত টাকা রাখতে হবে। এই প্রশ্নের আসলে কোন উত্তরই নেই, ডকুমেন্ট এর মতো আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা ব্যাংক ব্যালেন্সও ভিসা অফিসার ধরেও দেখবেন না। যদিও দেখে খুব রেয়ার কেসে। আমাদের কথাটি হয়তো বুঝতে পেরেছেন আমেরিকা টুরিস্ট ভিসা ক্ষেত্রে এইসব ডকুমেন্টারি ইস্যু আপনার জন্য কোন ধরনের ভ্যালু রাখে না।

আমেরিকার ভিসার ব্যাপারে কোনভাবে আপনারা কন্ট্রাকে কারো সাথে যোগাযোগ করবেন না। কোনভাবে কন্ট্রাকে আমেরিকার ভিসা নিবেন এই বিষয়টি মন থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে দিন। আমেরিকার ভিসা কন্ট্রাকে বা টাকা পয়সা দিয়ে কোনভাবে নেওয়া যায় না। সঠিকভাবে আবেদন করে ও সঠিকভাবে ইন্টারভিউ দিয়ে আপনি পেতে পারেন আমেরিকার টুরিস্ট (B1/B2) ভিসা।

সাধারণ অ-অভিবাসী ভিসার জন্য আবেদন ফি হল US$160। এর মধ্যে রয়েছে পর্যটক, ব্যবসা, ছাত্র এবং বিনিময় ভিসা।  যা বাংলাদেশ এর টাকায় কনভার্ট করলে আসে ১৭৩৭২.১৪/- টাকা। এই টাকা শুধুমাত্র EBL অর্থাৎ ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এ জমা দেওয়া যায়। এই টাকা জমা দিয়ে ইন্টারভিউ এর ডেট নিতে হয়।

সর্বপরি একটা কথা বলবো, আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসার ক্ষেএে যদি DS-160 ফর্মটি একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা পূরণ করাতে পারেন, কারণ এই ফর্ম এর উপর আপনার ভিসা অনেকাংশ নির্ভর করে ও আমেরিকা যাওয়ার যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেন। এবং ইন্টারভিউতে ভিসা অফিসারকে সন্তুষ্ট করতে পারলে, আপনার ভিসাটি হবে।