Bangla Helpline

bangla helpline
japan work permit

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানে জনসংখ্যা সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষ শ্রমিকের কাজের বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশ সরকার সরকারিভাবে জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় সরকারিভাবে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সরকারিভাবে চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসের মধ্যে ২৯০ জন শ্রমিক জাপানে গেছেন। ওয়ার্ক পারমিট জাপানে যাওয়ার ইচ্ছা ? বাংলাদেশ থেকে জাপান ভিসা পেতে হলে কি করতে হবে, কত টাকা খরচ, কোথায় আবেদন করবেন, কি কি লাগবে সব বিষয়ে জানতে পারবেন এই আর্টিকেল থেকে।

বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার সুবিধা

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার জন্য কোন খরচ নেই। বাংলাদেশ সরকারই সব খরচ বহন করে থাকে। জাপানে যাওয়ার জন্য সব প্রক্রিয়া সরকারের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই প্রতারণার সম্ভাবনা নেই। সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার জন্য প্রার্থীদের যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য একটি নিয়মিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উত্তীর্ণ হলেই জাপান যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার আগে প্রার্থীদের জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে জাপানে অভিযোজন করা সহজ হয়।

বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার খরচ

সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার জন্য কোন খরচ নেই। বাংলাদেশ সরকারই সব খরচ বহন করে। তবে, জাপানে যাওয়ার জন্য প্রার্থীদের কিছু ব্যক্তিগত খরচ বহন করতে হয়। যেমন, জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ, পাসপোর্ট তৈরি, ভিসা আবেদন, ইত্যাদি। এসব খরচ প্রার্থীদের নিজস্ব বহন করতে হয়।

সরকারিভাবে জাপানে গেলে বেতন

সরকারিভাবে জাপানে গেলে প্রার্থীরা জাপানি আইন অনুযায়ী বেতন পাবেন। জাপানি আইন অনুযায়ী, একজন কর্মচারীর বেতন তার কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। সাধারণত, একজন দক্ষ কর্মচারীর মাসিক বেতন ¥250,000 থেকে ¥300,000 (প্রায় ২,৫০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০ টাকা) এর মধ্যে হয়ে থাকে। এছাড়াও, কর্মচারীদের ওভারটাইম, বোনাস, ইত্যাদি সুবিধাও দেওয়া হয়।

কখন সরকারিভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়

বছরের বিভিন্ন সময় সরকারিভাবে নিয়োগ সার্কুলার প্রকাশ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) প্রতি বছর জাপানে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সাধারণত, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে, কখনও কখনও বছরের অন্যান্য সময়েও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে।

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার যোগ্যতা

IM Japan (International Manpower Development organization)এর সহায়তায়    
বিএমইটি’র মাধ্যমে সরকারিভাবে বিনা খরচে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ণ প্রেরণের পদ্ধতি ও শর্তসমূহ: 

  • Level N5 বা জাপানী ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকতে হবে। 
  • প্রার্থীর বয়স ১৮ হতে ৩০ বছর।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : এস.এস.সি।
  • উচ্চতা কমপক্ষে ১৬০ পস হতে হবে।
  • ইতোপূর্বে যারা জাপানে কর্মরত ছিলেন তারা আবেদন করতে পারবেন না।

সরকারিভাবে জাপান শারীরিক যোগ্যতা

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার জন্য প্রার্থীদের নিম্নলিখিত শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে:

  • দৌড়: ১০০ মিটার দৌড়ে ১৪ সেকেন্ডের মধ্যে শেষ করতে হবে
  • সিট আপ: ১ মিনিট সময়ে ১৫ টি সিট আপ করতে হবে
  • পুশ আপ: ১ মিনিট সময়ে ১০ টি পুশ আপ করতে হবে

এছাড়াও, প্রার্থীদের শারীরিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম হতে হবে।

সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার এজেন্সি

বাংলাদেশ থেকে জাপানে সরকারিভাবে কর্মী পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) । বোয়েসেল হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি সংস্থা যা বিদেশের বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর কাজ করে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তালিকায় বলা হয়েছে, বিএমইটি ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) পাশাপাশি প্রায় আরো ৭০টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি জাপানে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন পেয়েছে।

সরকারিভাবে জাপানে গেলে কি ধরনের কাজ করা হয়

বছরের বিভিন্ন সময় সরকারিভাবে নিয়োগ সার্কুলার প্রকাশ করা হয়ে থাকে। সরকারিভাবে জাপানে যাওয়া কর্মীরা সাধারণত নিম্নলিখিত ধরনের কাজ করেন:

কারখানা: কারখানায় বিভিন্ন ধরনের কাজ, যেমন, উৎপাদন, প্যাকেজিং, মেরামত, ইত্যাদি।

বিল্ডিং নির্মাণ: বিল্ডিং নির্মাণে বিভিন্ন ধরনের কাজ, যেমন, ইট-কাঠের কাজ, ইলেকট্রিক্যাল কাজ, প্লাম্বিং কাজ, ইত্যাদি।

কৃষি: কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কাজ, যেমন, ফসল চাষ, ফল চাষ, মাছ চাষ, ইত্যাদি।

সেবা খাত: হোটেল, রেস্তোরাঁ, নার্সিং হোম, ইত্যাদি সেবা খাতে বিভিন্ন ধরনের কাজ।

জাপানে সরকারিভাবে যেতে কত টাকা লাগে

আপনি যদি সরকারি ভাবে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পান তাহলে আপনার খরচ একেবারেই অল্প টাকার মধ্যেই হয়ে যাবে। শুধুমাত্র পাসপোর্ট তৈরি, মেডিক্যাল ফি এবং বহির্গমন ছাড়পত্র সংক্রান্ত ফি কর্মীদের বহন করতে হবে।   শুধু অন্যান্য খরচ এর জন্য ১ লক্ষ টাকা হলেই চলবে।

সরকারিভাবে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার জন্য প্রার্থীদের নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হয়:

  • Level N5  বা জাপানী ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা সংক্রান্ত মূলসনদসহ ১ সেট ফটোকপি। 
  • এস.এস.সি মূল সনদপত্রসহ ১ সেট ফটোকপি।
  • সদ্যতোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 
  • মূল জাতীয় পরিচয়পত্রসহ (National ID) অথবা জন্ম সনদসহ  (Birth Certificate)১ সেট ফটোকপি।
  • জীবন-বৃত্তান্ত (Bio-data)

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:

  • বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে (www.boesl.gov.bd/) গিয়ে আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করুন।
  • আবেদন ফর্মটি পূরণ করুন।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করুন।
  • আবেদন ফরমটি বোয়েসেলের অফিসে জমা দিন।

আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বোয়েসেল প্রার্থীদের নির্বাচনের জন্য একটি পরীক্ষা গ্রহণ করে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের জাপানে কর্মসংস্থানের জন্য চুক্তিপত্র প্রদান করা হয়।

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার সুবিধা

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে বিনামূল্যে জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ, বিমান ভাড়া, ভিসা ফি, এবং অন্যান্য খরচের বিনিময়ে বোয়েসেল থেকে ভাতা পাওয়া, জাপানে পাওয়ার পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত বোয়েসেল থেকে ভাতা পাওয়া, এবং জাপানে কাজ করার সময় একটি সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন পাওয়া। এই সুবিধাগুলি প্রার্থীদের জাপানে যাওয়ার এবং কাজ করার খরচ কমাতে সাহায্য করে।