পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে একটি সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো—রেসিডেন্ট কার্ড হারিয়ে যাওয়া। অনেকেই জানেন না, এই পরিস্থিতিতে কী করতে হবে বা কোথা থেকে শুরু করবেন। তাই আজকের এই গাইডে জানানো হলো রেসিডেন্ট কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয় ধাপে ধাপে ও বিস্তারিতভাবে।
ধাপ ১: রেসিডেন্ট কার্ড হারানোর পর খোঁজাখুঁজি করুন
যখনই বুঝবেন আপনার রেসিডেন্ট কার্ড হারিয়ে গেছে, প্রথমে আতঙ্কিত না হয়ে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালোভাবে খুঁজুন। অনেক সময় ব্যাগ, জামার পকেট বা বাসার কোনে ফেলে রাখলেও খেয়াল থাকে না।
টিপস: পরিচিত রেস্টুরেন্ট, দোকান বা অফিসেও খোঁজ নিতে পারেন যেখানে আপনি গিয়েছিলেন।
ধাপ ২: থানায় “Lost GD” বা “Participation de Perda” করবেন
যদি ২৪ ঘণ্টা পরেও কার্ড না পাওয়া যায়, তবে নিকটস্থ থানায় গিয়ে একটি লস্ট জিডি (GD) করতে হবে।
- থানায় যাওয়ার সময় আপনার পাসপোর্ট অথবা রেসিডেন্ট কার্ডের ফটোকপি নিয়ে যান।
- জিডি করার পর প্রাপ্ত GD কপি ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন।
এটি পরে অনলাইন আবেদন করার সময় প্রয়োজন হবে।
ধাপ ৩: অনলাইনে আবেদন করুন – AIMA পোর্টালের মাধ্যমে
বর্তমানে AIMA (Agência para a Imigração e Mobilidade) রেসিডেন্ট কার্ড হারিয়ে গেলে নতুন করে ইস্যু করার জন্য একটি অনলাইন আবেদন ব্যবস্থা চালু করেছে।
🔗 আবেদনের লিংক:
👉 https://contactenos.aima.gov.pt/contact-form?sfnsn=wa
ফর্ম পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ:
তথ্যের ধরন | কী বসাবেন |
---|---|
Tipo de Assunto | Autorizaçao de residência |
Subtipo de Assunto | Segunda via |
Endereço de Email | আপনার সচল ইমেইল ঠিকানা |
Nome Completo | আপনার পূর্ণ নাম |
Data de Nascimento | জন্মতারিখ (dd-mm-yyyy ফরম্যাটে) |
Nacionalidade | BANGLADESH |
Número de Telemóvel | আপনার পর্তুগিজ মোবাইল নম্বর |
Número do Cartão | হারানো রেসিডেন্ট কার্ডের নম্বর |
Número do Passaporte | আপনার পাসপোর্ট নম্বর |
বি.দ্র.: ইমেইল দেওয়ার পর সেখানে একটি কোড আসবে, সেটি নির্ধারিত ঘরে বসাতে হবে।
ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন
নিচের তিনটি ডকুমেন্ট স্ক্যান করে PDF বা JPG ফরম্যাটে আলাদা ফোল্ডারে আপলোড করতে হবে:
- পাসপোর্টের কপি
- রেসিডেন্ট কার্ডের কপি (যদি পূর্বে স্ক্যান করে রেখে থাকেন)
- থানার জিডির কপি (Participation de Perda)
ধাপ ৫: সাবমিট করুন এবং অপেক্ষা করুন
সব তথ্য এবং ডকুমেন্ট সাবমিট করার পর, এটি প্রাথমিক আবেদন হিসেবে গণ্য হবে। এরপর কিছুদিনের মধ্যে AIMA আপনার ইমেইলে একটি নির্দেশনা পাঠাবে, যেখানে পরবর্তী পদক্ষেপ কী তা বিস্তারিত বলা থাকবে।
অতিরিক্ত টিপস:
- রেসিডেন্ট কার্ড হারালে ভোটার আইডি বা পাসপোর্ট ব্যবহার করে আপনার পরিচয় প্রমাণ করতে পারেন।
- যদি জরুরি কাজে কার্ডের প্রয়োজন হয়, AIMA অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করা যেতে পারে (তবে আগে ইমেইলের উত্তর বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকা জরুরি)।
- সব সময় রেসিডেন্ট কার্ড ও পাসপোর্টের ডিজিটাল কপি Google Drive বা ইমেইলে সেভ করে রাখুন।
রেসিডেন্ট কার্ড হারানো যেমন চিন্তার বিষয়, ঠিক তেমনি এটি সমাধানযোগ্য একটি বিষয়ও। উপরের ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনি সহজেই নতুন কার্ডের আবেদন করতে পারবেন এবং পুনরায় একটি কার্ড পেতে পারবেন।
আপনার বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিত কারো যদি এই ধরণের সমস্যা হয়, তাদের সাথে এই তথ্যটি শেয়ার করুন।
📌 সতর্কতা: কোনো দালালের সাহায্য নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। অনলাইন আবেদন সম্পূর্ণ ফ্রি ও সরাসরি করা যায়।