বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত স্পেসএক্স পরিচালিত স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা Starlink। আজ মঙ্গলবার থেকে এই সেবার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সর্বত্র উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে।
প্রচলিত ইন্টারনেট পরিষেবায় অপটিক্যাল ফাইবার ও তারের নির্ভরতা এবং সরকারি নিয়ন্ত্রণের কারণে দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে। এসব সমস্যা সমাধানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা নতুন যুগের সূচনা করলো।
স্টারলিংক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে থাকা গ্রাউন্ড স্টেশন, পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা হাজারো কৃত্রিম উপগ্রহ এবং গ্রাহকের রিসিভার অ্যান্টেনার মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করা হয়। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে (প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) থাকা প্রায় ৭ হাজার স্যাটেলাইট একে অন্যের সঙ্গে সংকেত আদান-প্রদান করে গ্রাহকের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দেয়।
বর্তমানে পৃথিবীর ১০০টিরও বেশি দেশে সফলভাবে সেবা দিচ্ছে স্টারলিংক। এবার বাংলাদেশও যুক্ত হলো সেই তালিকায়।
কীভাবে সংযোগ পাওয়া যাবে?
বাংলাদেশের গ্রাহকরা স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট starlink.com এ গিয়ে ঠিকানা দিয়ে দেখতে পারবেন এই সেবা তাদের এলাকায় উপলব্ধ কি না। এরপর পছন্দসই সার্ভিস প্ল্যান বেছে নিয়ে হার্ডওয়্যার কিট অর্ডার করতে হবে।
স্ট্যান্ডার্ড হার্ডওয়্যার কিটে থাকছে:
- একটি স্যাটেলাইট ডিশ
- ওয়াইফাই রাউটার
- মাউন্টিং ট্রাইপড
- প্রয়োজনীয় ক্যাবল
এই কিটের মূল্য এককালীন ৪৭,০০০ টাকা এবং সেটআপ প্রক্রিয়া খুব সহজ। স্যাটেলাইট ডিশটি আকাশমুখী করে ফাঁকা জায়গায় স্থাপন করলেই ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে।
প্যাকেজ ও মূল্য তালিকা
ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য:
- রেসিডেনশিয়াল: মাসিক ৬,০০০ টাকা
- রেসিডেনশিয়াল লাইট: মাসিক ৪,২০০ টাকা
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য (রোম প্যাকেজ):
- ৫০ জিবি: মাসিক ৬,০০০ টাকা
- আনলিমিটেড: মাসিক ১২,০০০ টাকা
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য (লোকাল প্রায়োরিটি):
- ৫০ জিবি: ৪,৬০০ টাকা
- ৫০০ জিবি: ১১,৮০০ টাকা
- ১ টেরাবাইট: ২০,৮০০ টাকা
গ্লোবাল প্রায়োরিটি (আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য):
- ৫০ জিবি: ৩২,০০০ টাকা
- ৫০০ জিবি: ৮৪,০০০ টাকা
- ১ টেরাবাইট: ১,৪৯,০০০ টাকা
বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করলো। বিশেষ করে দুর্গম অঞ্চল ও অফ-গ্রিড এলাকায় এই সেবা ডিজিটাল বিভাজন কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।