ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ বা ৩ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে বলে জানিয়েছে। এ উপলক্ষে ২ মার্চ রমজান শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ধরে ঢাকার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী, ২ মার্চ প্রথম রমজানে ঢাকায় সেহরির শেষ সময় ভোর ৫টা ৪ মিনিট এবং ইফতারের সময় সন্ধ্যা ৬টা ২ মিনিট। রমজান মাসের শেষ দিকে, ৩০ মার্চ, সেহরির শেষ সময় হবে ভোর ৪টা ৩৪ মিনিট এবং ইফতারের সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট।
২০২৫ সালের রমজান মাসের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি (ঢাকা জেলা)
রমজান | তারিখ (২০২৫) | দিন | সাহরির শেষ সময় | ইফতারের সময় |
---|---|---|---|---|
১ | ২ মার্চ | রোববার | ০৫:০৪ AM | ০৬:০২ PM |
২ | ৩ মার্চ | সোমবার | ০৫:০৩ AM | ০৬:০৩ PM |
৩ | ৪ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৫:০২ AM | ০৬:০৩ PM |
৪ | ৫ মার্চ | বুধবার | ০৫:০১ AM | ০৬:০৪ PM |
৫ | ৬ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৫:০০ AM | ০৬:০৪ PM |
৬ | ৭ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৫৯ AM | ০৬:০৫ PM |
৭ | ৮ মার্চ | শনিবার | ০৪:৫৮ AM | ০৬:০৫ PM |
৮ | ৯ মার্চ | রোববার | ০৪:৫৭ AM | ০৬:০৬ PM |
৯ | ১০ মার্চ | সোমবার | ০৪:৫৬ AM | ০৬:০৬ PM |
১০ | ১১ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৪:৫৫ AM | ০৬:০৭ PM |
১১ | ১২ মার্চ | বুধবার | ০৪:৫৪ AM | ০৬:০৭ PM |
১২ | ১৩ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৪:৫৩ AM | ০৬:০৮ PM |
১৩ | ১৪ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৫২ AM | ০৬:০৮ PM |
১৪ | ১৫ মার্চ | শনিবার | ০৪:৫১ AM | ০৬:০৯ PM |
১৫ | ১৬ মার্চ | রোববার | ০৪:৫০ AM | ০৬:০৯ PM |
১৬ | ১৭ মার্চ | সোমবার | ০৪:৪৯ AM | ০৬:১০ PM |
১৭ | ১৮ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৪:৪৮ AM | ০৬:১০ PM |
১৮ | ১৯ মার্চ | বুধবার | ০৪:৪৭ AM | ০৬:১১ PM |
১৯ | ২০ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৪:৪৬ AM | ০৬:১১ PM |
২০ | ২১ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৪৫ AM | ০৬:১২ PM |
২১ | ২২ মার্চ | শনিবার | ০৪:৪৪ AM | ০৬:১২ PM |
২২ | ২৩ মার্চ | রোববার | ০৪:৪৩ AM | ০৬:১৩ PM |
২৩ | ২৪ মার্চ | সোমবার | ০৪:৪২ AM | ০৬:১৩ PM |
২৪ | ২৫ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৪:৪১ AM | ০৬:১৪ PM |
২৫ | ২৬ মার্চ | বুধবার | ০৪:৪০ AM | ০৬:১৪ PM |
২৬ | ২৭ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৪:৩৯ AM | ০৬:১৫ PM |
২৭ | ২৮ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৩৮ AM | ০৬:১৫ PM |
২৮ | ২৯ মার্চ | শনিবার | ০৪:৩৭ AM | ০৬:১৬ PM |
২৯ | ৩০ মার্চ | রবিবার | ০৪:৩৬ AM | ০৬:১৬ PM |
৩০ | ৩১ মার্চ | সোমবার | ০৪:৩৫ AM | ০৬:১৭ PM |
📖 সেহরির ফজিলত ও করণীয়
রমজান মাসে রোজা পালনের জন্য শেষ রাতে পানাহার করাকে সাহরি বলা হয়। ইসলামে এটি সুন্নত হলেও, প্রকৃতপক্ষে সাহরি তাকওয়া অর্জন এবং আধ্যাত্মিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
📖 সাহরির সংজ্ঞা ও ইসলামিক বিধান
🔹 শরিয়তের পরিভাষায়, রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সুবেহ সাদিকের আগে যে পানাহার করা হয়, তাকে সাহরি বলা হয়।
🔹 সাহরি খাওয়া সুন্নত, এবং এতে বিশেষ বরকত রয়েছে।
📜 হাদিস:
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন,
নবীজি (সা.) বলেছেন:
“তোমরা সাহরি খাও, কেননা সাহরিতে বরকত রয়েছে।”
📖 (সহিহ বুখারি, সওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮০১)
🔹 হজরত আমর ইবনুল আস (রা.) বর্ণনা করেন,
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আমাদের রোজা আর আহলে কিতাবদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া আর না খাওয়া।”
📖 (সহিহ মুসলিম, আলফিয়াতুল হাদিস, পৃষ্ঠা: ১৩১)
⏳ কখন সাহরি খাওয়া উত্তম?
🔹 ইসলামি ফিকহ অনুযায়ী, অর্ধরাত্রি থেকে সুবেহ সাদিক পর্যন্ত সাহরির সময়।
🔹 ইমাম যামাখ্শারী (র.) ও ফকিহ আবুল লাঈস সমরকন্দী (র.) বলেন, “সাহরির সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ।”
📖 (মিরকাত শরহে মিশকাত)
💡 সুন্নত অনুযায়ী:
✔️ সাহরি শেষ সময়ে বিলম্বে খাওয়া উত্তম।
✔️ কিন্তু সন্দেহপূর্ণ সময়ে নয়— সুবেহ সাদিকের আগেই পানাহার শেষ করা উচিত।
📜 হাদিস:
🔹 হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন,
রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন: “তোমরা সাহরি খাও; যদি তা এক ঢোঁক পানিও হয়।”
📖 (তিরমিজি, হাদিস: ৭৩১)
🔹 অন্যত্র বলেছেন,
“তোমরা সাহরি খাও; যদি এক লোকমা খাদ্যও হয়।”
👉 অর্থ: সাহরির জন্য বেশি খাবার প্রয়োজন নেই, এক ঢোঁক পানি, এক খেজুর বা এক কাপ দুধ হলেও সাহরির বরকত পাওয়া যাবে।
🌅 ইফতারের ফজিলত ও সুন্নত
ইফতার দ্রুত করা সুন্নত এবং এটি দোয়া কবুলের অন্যতম সময়।
🔹 হাদিস:
রাসুল (সা.) বলেছেন,
“লোকেরা ততক্ষণ কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতক্ষণ তারা ইফতার দ্রুত করবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯৫৭)
🔹 ইফতারের আদব:
✔️ খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত।
✔️ ইফতারের আগে দোয়া করা।
✔️ দান-সদকা করা এবং অন্যকে ইফতার করানো।
🕌 ইফতারের দোয়া:
📜 اللهم لك صمتُ وبك آمنتُ وعليك توكلتُ وعلى رزقك أفطرتُ
👉 উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু।
👉 অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি, তোমার ওপর ঈমান এনেছি, তোমার ওপর ভরসা করেছি এবং তোমার দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি।
🤲 ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“তিন ব্যক্তির দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না— রোজাদারের ইফতারের সময়, ন্যায়পরায়ণ শাসকের এবং মজলুমের।” (তিরমিজি, হাদিস: ২৫২৬)
⏩ তাই ইফতারের আগে ও পরে বেশি বেশি দোয়া করুন এবং আল্লাহর রহমত কামনা করুন।
❤️ অন্যকে ইফতার করানোর ফজিলত
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে এবং রোজাদারের সওয়াব মোটেও কমবে না।” (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৭)
✔️ গরিবদের মাঝে ইফতার বিতরণ করুন।
✔️ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের ইফতার করান।
✔️ মসজিদে ও অসহায়দের মাঝে ইফতার আয়োজন করুন।
রমজান মাস আত্মশুদ্ধির মাস। সেহরি ও ইফতার কেবল শারীরিক খাবার গ্রহণের বিষয় নয়, বরং এটি মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। তাই সময়মতো সেহরি ও ইফতার করুন, নিয়ম মেনে পালন করুন এবং বেশি বেশি ইবাদত করুন।
🌙 রমজানের বরকতপূর্ণ সময়গুলো সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভ করি। আমিন।