সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি প্রবাসীর একটি রিল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক অদ্ভূত ধরনের টিকটিকি সদৃশ প্রাণী ফোঁসফোঁস করছে। প্রাণীটির নাম ‘সান্ডা’। কাঁটাযুক্ত লেজওয়ালা এই সান্ডা দেখতে যেমন অদ্ভূত, তেমনি আচরণেও বেশ রহস্যময়।
ভিডিওটি করেছেন আবদুল মান্নান নামের এক প্রবাসী। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ও ভাইরে ভাই… সাপের মতো ফঁস ফঁস করে, দেখেন, ওয়াও, অসাধারণ!’ কথার সঙ্গেই সান্ডাটি ফোঁস করে ওঠে। দৃশ্যটি মজার ও চমকপ্রদ হওয়ায় তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে নানা সামাজিক মাধ্যমে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সৌদির মরুভূমিতে অবস্থানরত অনেক বাঙালি প্রবাসীই নিজেদের দেখা সান্ডার ভিডিও পোস্ট করতে শুরু করেন।
প্রবাসীদের মাঝে ভাইরাল ট্রেন্ড
সান্ডা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে নানান রকমের মজার মন্তব্য। কেউ লিখছেন, ‘ভিসা রিনিউ করতে হলে সান্ডা লাগবে’, আবার কেউ ব্যঙ্গ করে বলছেন, ‘সান্ডা শিকার করতে না পারলে চাকরি থাকবে না।’ এইসব পোস্টে স্পষ্ট, মজা এবং কৌতুকের ছলে সান্ডা এখন প্রবাসী জীবনের একটি ‘ভাইরাল চরিত্রে’ পরিণত হয়েছে।
সান্ডা আসলে কী?
সান্ডা এক ধরনের টিকটিকি প্রজাতির প্রাণী হলেও এর শরীর সাধারণ টিকটিকির চেয়ে অনেক বেশি মাংসল ও বড়। এর লেজে থাকে কাঁটা, যা দিয়ে এটি আত্মরক্ষার কাজ করে। সান্ডা মাংসাশী নয়—এটি শুকনো পাতা, ঘাস এবং লতা খেয়ে বেঁচে থাকে। মরুভূমির খড়া ও কঠিন পরিবেশেও এটি সহজেই টিকে থাকতে পারে।
আরব ধনীদের পছন্দের খাবার
জানা গেছে, আরবের অনেক ধনী ব্যক্তিরা সান্ডা খেতে ভালোবাসেন। তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন, সান্ডার মাংসে রয়েছে বিশেষ পুষ্টিগুণ ও যৌনউত্তেজক উপাদান। ফলে মরুভূমিতে কাজ করা শ্রমিক বা সেবকরা প্রভুদের জন্য সান্ডা শিকার করে নিয়ে আসেন। এর ফলে সান্ডা ধীরে ধীরে মরু অঞ্চলের এক বিশেষ ‘চাহিদাসম্পন্ন প্রাণী’তে রূপ নিয়েছে।
বাংলাদেশে সান্ডার উপস্থিতি
বাংলাদেশেও কিছু এলাকায় সান্ডা দেখা যায়। তবে এখানকার মানুষ অনেক সময় গুঁইসাপের সঙ্গে সান্ডাকে মিলিয়ে ফেলেন। মূলত শরীরের গঠন এবং চলাফেরা দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হন। তবে বুদ্ধিমান চোখের জন্য সান্ডা এবং গুঁইসাপের পার্থক্য ধরা খুব একটা কঠিন নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সান্ডার এই নতুন আগমন এবং আলোচনার ঢেউ শুধু প্রবাসীদের নয়, দেশের সাধারণ মানুষকেও কৌতূহলী করে তুলেছে। একদিকে যেমন এটি একটি প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত বিষয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে মজার ভিডিও ও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে এটি হয়ে উঠেছে বর্তমান সময়ের একটি ‘ভাইরাল সেনসেশন’।