Bangla Helpline – বাংলা হেল্প লাইন

অভিবাসীদের প্রথম পছন্দের কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি হল পর্তুগাল।পর্তুগালে এমন একটি দেশ যেখানে সহজেই রেসিডেন্ট কার্ড পাওয়া যায় এবং ইউরোপে বসবাস করার সুযোগ হয়। পর্তুগালে রেসিডেন্ট কার্ড পাওয়ার সাথে সাথে পর্তুগালে ফ্যামিলির সবার জন্য আবেদনের কাজ শুরু করা যায় | এটা কে পর্তুগালে Family Reunification বলে। এটি অবশ্যই পর্তুগিজ ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস (Serviço de Estrangeiros e Fronteiras, বা SEF) এর কাছে করা হয় । এই প্রাথমিক আবেদনটি 60 দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া করা হবে এবং বাসিন্দা, পরিবারের সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা হবে। পর্তুগালে ফ্যামিলি ভিসায় কিভাবে ফ্যামিলি আনবেন এ নিয়ে বিস্তারিত একটা ধারনা পাওয়া যাবে।

প্রাথমিক আবেদন প্রক্রিয়াকরণ ও অনুমোদনের পর, যে পরিবারের সদস্য পর্তুগালে যেতে ইচ্ছুক তাকে তাদের নিজ দেশে পর্তুগিজ দূতাবাস বা কনস্যুলেটে আবেদন করতে হবে।

স্থানীয় পর্তুগিজ দূতাবাস বা কনস্যুলেটে আবেদন করার সময়, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার কাছে আপনার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি প্রস্তুত এবং প্রস্তুত আছে। উল্লেখ্য যে পর্তুগিজ ভাষায় নয় এমন যেকোন নথিগুলিকে একজন অনুমোদিত অনুবাদকের দ্বারা পর্তুগিজ ভাষায় অনুবাদ করতে হবে এবং তারপর একটি নোটারি দ্বারা প্রত্যয়িত করতে হবে৷

তারপরে আপনাকে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের সাথে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারণ করতে হবে যেখানে আপনি আপনার নথি উপস্থাপন করবেন।

আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে, আপনি পর্তুগাল ভ্রমণ করতে পারেন। পর্তুগালে আপনার আগমনের পরে একজন বাসিন্দা হিসাবে নিবন্ধন করতে এবং আপনার দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের পারমিট পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই SEF-এর সাথে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হবে।

যারা ফ্যামিলি নিয়ে এসেছি তাদের অনেকেরই বিষয় টি জানা আছে। এখানে আমরা আরো বিস্তারিত জানতে পারব।

প্রথমে কার্ড আসার পর যাদের আনবেন (যেমন মা বাবা স্ত্রী ছেলে মেয়ে )তাদের সবার নাম ,জন্ম তারিখ দিয়ে SEF -সেফের নাম্বারে  কল করে মার্কাসা নিবেন | কথা  বলার জন্য ইংলিশ বা হিন্দি যে ভাষায় কথা বলতে পারেন সেই ভাষায়  কথা বলতে পারবেন। মার্কাসা নেওয়ার পরই ডকুমেন্টের প্রস্তুতির কাজ।

ফ্যামিলি পারমিশনের জন্য যে সমস্ত কাগজ সেফ কে দিতে হবে

  • যাদের জন্য আবেদন করবেন তাদের প্রত্যেকের কালার কপি পাসপোর্ট (স্বামী বা স্ত্রী হলে পাসপোর্ট অবশ্যই স্বামী বা স্ত্রীর নাম থাকতে হবে)।
  • জন্ম নিবন্ধন ইংলিশ কপি ,ছোট-বাচ্চাদের ক্ষেত্রে | মা বাবার ক্ষেত্রে যিনি আনবেন উনার জন্ম নিবন্ধন কপি
  • ম্যারেইজ সার্টিফিকেট ইংলিশ কপি   (স্বামী বা স্ত্রী হলে )
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (৯০দিন মেয়াদের সর্বোচ্চ ৬ মাস গ্রহণযোগ্য)
  • অথোরাইজেশন বা ডিক্লেয়ারেশন, যদি ছেলে মেয়ে থাকে | নিচে ডিক্লেয়ারেশন এর কপি দেওয়া আছে। উক্ত ডকুমেন্ট গুলো ( পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়া) প্রথমে নোটারী এবং ফরেন মিনিস্ট্রি, ল এবং জাস্টিস মিনিস্ট্রি থেকে সত্যায়িত করে পর্তুগালে এনে বাংলাদেশ এম্বাসি সত্যায়ন করে পর্তুগিজ ট্রান্সলেশন ও নোটারী, (পাসপোর্ট কপি শুধু নোটারী) করে পর্তুগিজ ফরেন মিনিস্ট্রি সত্যায়িত করার পর সেইফ দেওয়ার জন্য উক্ত ডকুমেন্ট প্রস্তুত হবে।

স্পনসর/পর্তুগালে যিনি আবেদন করবেন চাকরীজিবি হলে

  • পাসপোর্ট
  • রেসিডেন্ট কার্ড
  • কাজের কন্টাক্ট
  • সর্বশেষ তিনটা সেলারি স্লিপ
  • বাৎসরিক আয়ের হিসাব অনুযায়ী আইআরএস এর কপি
  • মালিকের ডিক্লেয়ারেশন
  • এসিটি পেপার
  • বাসার কন্টাক্ট / বাসার মালিকের ডিক্লেয়ারেশন
  • মা বাবার বয়স ৬৫ কম হলে বেকার হিসাবে মেডিকেল ডকুমেন্ট ও মাসে মাসে টাকা পাঠানোর 6 – 10 টা রিসিপ্ট

পূরণ কৃত TERMO DE RESPONSABILIDADE FORM “https://www.sef.pt/pt/Documents/TR_Fronteiras.pdf

ব্যবসায়ী হলে

  • পাসপোর্ট
  • রেসিডেন্ট কার্ড
  • আইআরএস Liquidacao এর কপি
  • ব্যবসার সর্বশেষ ব্যালেনশিট
  • শপ এর কন্টাক্ট পেপার
  • ফিন্যান্স থেকে No davida পেপার
  • সোশ্যাল থেকে No davida পেপার
  • ব্যবসার এক্টিভিটি পেপার
  • বাসার কন্টাক্ট /বাসার মালিকের ডিক্লেয়ারেশন/ জুন্তা

পূরণ কৃত TERMO DE RESPONSABILIDADE FORM  https://www.sef.pt/pt/Documents/TR_Fronteiras.pdf

চাকরিজীবি বা ব্যবসায়ি হলে সেলারী স্লিপ আইআরএস ও ব্যালেনশীট এ অভিবাসন অধিদপ্তরের নির্ধারিত মাসিক ও বাৎসরিক আয়ের নিম্ন বর্ণিত হিসাব থাকতে হবে

প্রতি বয়স্ক ১৮ বছরের উপর সদস্যের জন্য স্পনসর / পর্তুগালের ব্যক্তির প্রতি মাসের বেসিক সেলারী 665-11% =591,85€+ 295,93€ । প্রতি বাচ্চা জন্য বেসিক সেলারী 591,85€+177,59€ এই হারে পূর্ববর্তী বছরের আইআরএস ও সর্বশেষ তিনটা সেলারী স্লিপ। ব্যবসায়িদের ও এই হারে ব্যালেনশীটে ইনকাম দেখাতে হবে। আইআরএস একদম কম হলে লাষ্ট তিন মাসের ইনকাম বা ব্যালেনশীট হিসাব মতো দেখিয়ে সাথে কিছু টাকা জমা কৃত ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিয়ে জমা দিতে পারবেন। নির্ধারিত মার্কাসার দিন সেফে উপরোক্ত ডকুমেন্ট জমা করার পর তিন মাসের মধ্যে হাতে হাতে অথবা বাসার ঠিকানায় ফ্যামিলি পারমিশন পাওয়ার পর এটা সহ নিচের ডকুমেন্ট গুলো

  • ভিসা আবেদন ফর্ম
  • সেনজেন ভিসা সাইজের দুই কপি নতুন কালার ছবি (3.5cm × 4.5cm matt paper white background)
  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট
  • জন্ম নিবন্ধন কপি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ও পর্তুগালের যিনি মা বাবাকে আনবেন উনার জন্ম নিবন্ধনের কপি
  • বিবাহ সনদ বা ম্যারেইজ সার্টিফিকেট ,
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট(৯০দিন মেয়াদের বর্তমানে করোনার কারণে ৬ মাস গ্রহণযোগ্য)
  • আইআরএস কপি , তিন বছরের না থাকলে যা আছে তাই
  • লাষ্ট তিন মাসের সেলারী স্লিপ
  • জব কন্টাক্ট
  • মালিকের ডিক্লেয়ারেশন
  • এসিটি পেপার
  •  আবেদনকারীর পাসপোর্টের কালার কপি
  • স্পনসর /পর্তুগালের ব্যক্তির পাসপোর্টের ১ থেকে ৪৮ পৃষ্ঠা সাদা-কালো কপি
  • সেফের পারমিশন লেটার ৯০ দিনের
  •  ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাষ্ট তিন মাসের
  • সেনজেন ট্রাভেল ইন্সুরেন্স 4-6 মাসের
  • ইন্ডিয়ান ভিসার কপি
  • ইন্ডিয়ান ভিসা নিয়ে সকল আবেদনকারী ইন্ডিয়াতে গিয়ে বাংলাদেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, ম্যারেইজ সার্টিফিকেট, বার্থ সাটিফিকেট বাংলাদেশ এম্বেসী দিল্লি থেকে শত্যায়ীত করে VFS গ্লোভাল দিল্লিতে উপরোক্ত সকল ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হয়, আবেদনের ফি 2754 রুপি +ভিসা ফিস 8070 রুপি (প্রাপ্ত বয়স্কদের ), ১৮ বছরের নিচের আবেদনের ফি 2754 রুপি +ভিসা ফিস ফ্রি।

এর পূর্বে VFS গ্লোভাল এ ফাইল জমা দেওয়ার তারিখ নিতে হয়, তারিখ নেওয়ার লিঙ্ক https://visa.vfsglobal.com/ind/en/prt/application-detail

VFS এই ভিসার আবেদনটি পর্তুগাল এম্বাসি দিল্লিতে পাঠাবে ভিসা রেডি হয়ে গেলে এম্বেসী আবেদনকারীর প্রদত্ত ইমেইলে ভিসা Approval ইমেইল পাঠাবে এখন আবেদন কারী নিজে অথবা কাউকে VFS এ ফাইল জমার রিসিট, পাসপোর্ট, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি লেটার দিয়ে ভিসা গ্রহণ করতে পারবেন, ভিসা হাতে পাওয়ার পর পরই ভিসা নাম্বার নাম ও জন্ম তারিখ দিয়ে সেফে কল করে রেসিডেন্ট কার্ডের জন্য মার্কাসা নিয়ে রাখা ভালো | কারণ মার্কাসা সাধারণত ৩-৫ মাস পর পাওয়া যায়।

পর্তুগালে আসার আগে শিক্ষার্থী বাচ্চাদের স্কুল সার্টিফিকেট ইংরেজি, বোর্ড সার্টিফিকেট ছাড়া বাকি বিভিন্ন শ্রেণির সার্টিফিকেট ,স্কুল প্রধান ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সিল ও সিগনেচার সহ নিয়ে এসে পর্তুগালে বাংলাদেশ এম্বাসি সত্যায়ন ও নোটারী ট্রান্সলেশন করে নিলে শুরুতে পর্তুগালে স্কুলে ভর্তির প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যায় |

সাথে বাংলাদেশের টিকার দেওয়ার হলুদ বইটি নিয়ে এসে শুধু পর্তুগিজ ট্রান্সলেশন করে সহজে পর্তুগালের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রেজিস্ট্রার হওয়া যাবে।

সবাই পর্তুগালে আসার পর যথারিতি প্রথমে ফিন্যান্স নাম্বার, রেসিডেন্ট কার্ড এর পর সোশ্যাল নাম্বার বের করে নিতে হয়।